সোমবার, ১৭ আগস্ট, ২০২০

প্রমান্য শাস্ত্র #মহাভারত #শ্রীগীতা #শ্রীমদ্ভাগবত_শাস্ত্র এবং #হরিবংশ কোথাও রাধার নাম উল্লেখ নেই!

#কতটা_জানি_আমরা?
#যতটা_জানি_সেটা_কি_সঠিক?

প্রমান্য শাস্ত্র #মহাভারত #শ্রীগীতা  #শ্রীমদ্ভাগবত_শাস্ত্র এবং #হরিবংশ কোথাও রাধার নাম উল্লেখ নেই! 

একটা বিষয় খেয়াল করুন, হরিবংশ, ভাগবত এবং মহাভারতে কৃষ্ণের একজন স্ত্রীর কথা বলা হয়েছে তিনি রুক্মিনী। তার সাথে কৃষ্ণের প্রেমের কথা বাদ দিয়ে এক নারীকে তার কৃষ্ণের পাশে দাঁড় করানো হয়, যিনি আয়ান ঘোষের  স্ত্রী, আরও একধাপ এগিয়ে গিয়ে বলা হয় তিনি নাকি #কৃষ্ণের_মামী। এখানে একটা প্রশ্ন থেকে যায় ৫২০০ বছর আগে তো হিন্দুদের মধ্যে ঘোষ পদবী ছিল না! তখন ছিল বংশ যেমন ঃ কুরুবংশ, যাবদ বংশ, বৃষ্ণি বংশ এইরুপ! 

#মহাভারতের সভাপর্বে যুধিষ্ঠিরের রাজসূয় যজ্ঞে শ্রীকৃষ্ণকে অর্ঘ্যপ্রদান করার শিশুপাল কৃষ্ণ নিন্দা শুরু করে। তিনি শ্রীকৃষ্ণের নামে অনেক মিথ্যা নিন্দাও করতে শুরু করে যেমন তিনি কংশকে বধ করেছেন, ভিমকে দিয়ে জরাসন্ধকে মল্যযুদ্ধে বধ করিয়েছেন এবং রুক্মিণী দেবীর সাথে শিশুপালের বিয়ে ঠিক হইছিল কিন্তু শ্রীকৃষ্ণ রুক্মিণী দেবীকে বিয়ে করে নিয়ে আসেন।  শিশুপাল শ্রীকৃষ্ণের নামে অনেক সত্য/মিথ্যা বানাইয়া নিন্দা করলেও কোথাও রাধার কথা বলে নি। যদি কৃষ্ণের জীবনে রাধা বলতে কেউ থাকত শিশুপাল অবর্ষই তার নিন্দা করতেন। এর থেকেও প্রমানিত হয় রাধা চরিত্র সম্পূর্ণ কাল্পনিক!  

হিন্দুধর্মের প্রাচীন কোনো গ্রন্থে রাধার উল্লেখ না থাকলেও, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে রাধার উল্লেখ আছে এবং এই পুরাণেই রাধার উৎপত্তি।

এই রাধার জন্ম হয় মূলত  মোঘল আমলে,  বৈষ্ণব বৈরতে যাহা রসালো রাজ কবি দ্বারা সৃষ্টি। রাজসভায় হাসি তামাশা করার জন্য।

সুবোধ এবং বেণীমাধবের ভাগবতে রাস অধ্যায়ে রাধার নাম না থাকলেও, রাস অধ্যায়ে রাধার নাম আছে এবং বেশ জমিয়ে আছে ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে; ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের ৪৮৮ পৃষ্ঠায় শ্রীকৃষ্ণের রাসযাত্রা পর্বে বলা হয়েছে, রাধার ২৭ জন সখী ৩৮ লক্ষ ৯ হাজার গোপিনীকে সাথে নিয়ে রাসমণ্ডলে উপস্থিত হয় এবং এই সংখ্যক যুবতী মেয়ে যদি সেই সময় বৃন্দাবনে থাকে, তাহলে আরও কমবেশি ৩৮ লক্ষ সক্ষম পুরুষ ছিলো বৃন্দাবনে, ছিলো তাদের বাপ মা মানে বৃদ্ধ বৃদ্ধা, এই সংখ্যা আরও কম বেশি ৩৮ লক্ষ; ছিলো ছেলে মেয়ে, ৩৮ লক্ষ যুবতী বধূর কম পক্ষে ৭৬ লক্ষ সন্তান থাকা সম্ভব, তাহলে সব মিলিয়ে সেই সময় বৃন্দাবনের লোক সংখ্যার হিসেব দাঁড়াচ্ছে প্রায় ২ কোটি, যা বর্তমানের ঢাকা বা দিল্লি বা মুম্বাইয়ের লোক সংখ্যার সমান; সেই ৫২০০ বছর আগে সারা ভারত মিলেও ২ কোটি লোক ছিলো না, আর এক বৃন্দাবনেই ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের লেখক ২ কোটি জনসংখ্যার কথা বলছে, এই একটি তথ্য থেকেই প্রমাণিত হয় যে, ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের সব কথা মিথ্যা। ( #বি_দ্রঃ রাসের সময়ে শ্রীকৃষ্ণের বয়স ছিল ৮, আবার কেউ কেউ বলে সারে ৮)

এই ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণকে বেদব্যাসের নাম দিয়ে চালানো হয়েছে এবং হয়, গীতা অনুসারে যে বেদব্যাস নিজেই শ্রীকৃষ্ণ এবং যে বেদব্যাস- মহাভারত, ভাগবত এবং হরিবংশের মাধ্যমে শ্রীকৃষ্ণকে ঈশ্বর হিসেবে তুলে ধরেছেন।

এই ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ অনুযায়ী রাধা কৃষ্ণের থেকে ১৩ বছরের বড়! আর প্রমান্য শাস্ত্র মহাভারত, ভাগতব এবং হরিবংশ অনুযায়ী শ্রীকৃষ্ণ ১০ বছর ২ মাস বয়সে বৃন্দাবন ত্যাগ করে মথুরায় চলে যায়,  তিনি আর কখনো বৃন্দাবনে ফিরে আসেন নি! তর্কের খাতিরে ধরেই নিলাম  রাধা বলতে কেউ আছে তা হলেও কোন ১০ বছরের কোন ছেলের সাথে ২৩ বছরের কোন মেয়ের কি সম্পর্ক হতে পারে?  

এখন আসি #স্টার_জলসা কতৃক সিরিয়াল রাধাকৃষ্ণ নিয়ে! এর আগেও একটা #স্টার_জলসায় একটা সিরিয়াল হইছে নাম ছিল ভক্তের ভগবান শ্রীকৃষ্ণ! 

#রাধাকৃষ্ণ সিরিয়ালে আয়ান ঘোষ শ্রীকৃষ্ণের কাকাতো ভাই,  আর #ভক্তের_ভগবান_শ্রীকৃষ্ণ সিরিয়ালে আয়ান ঘোষ শ্রীকৃষ্ণের মামা আর রাধা মামি! ওদের মতেই রাধা শ্রীকৃষ্ণের  থেকে ১৩ বছরের বড় হলেও উভয় সিরিয়ালেই রাধা কৃষ্ণকে সমবয়সী দেখানো হয়েছে! আর আগেই বলেই মহাভারত যুগে ঘোষ পদবী ছিল না, তাই যখন ব্রহ্মবৈবত্য পুরান লেখা হইছে তখন হিন্দুদের মধ্যে পদবীর প্রচলন শুরু হইছিল! আবার রাধাকৃষ্ণ সিরিয়ালে আয়ান ঘোষকে একজন ভিলেন হিসেবে দেখানো হয়েছে এবং ভক্তের ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সিরিয়ালে আয়ান ঘোষ ছিলেন সংসারের প্রতি উদাসীন এক কালীমায়ের ভক্ত সে মোটামুটি সারাদিন কালী পূজা করতেই ব্যাস্ত থাকতেন! 

শ্রীগীতা ( ১৩/১৭) এবং শ্রীমদ্ভাগবত ( ১/২) এ ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং শিবকে এক এবং অদ্বিতীয় ঈশ্বরের গুনাবতার বলে বর্নণা হয়েছে। সুতরাং যদি রাধা কৃষ্ণ এক হইত তার কথাও উল্লেখ থাকত! 

 
#বি_দ্র ঃ ২৫০০ বছর পূর্বে #বৌদ্ধ_ধর্ম প্রচারের ক্ষেত্রেও ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড় বাধা ছিল শ্রীকৃষ্ণ কারন তখনও ভারতবর্ষে  সবাই মোটামুটি কৃষ্ণ ভক্ত ছিলেন, এই জন্য বৌদ্ধ ধর্মগ্রহন্তে একজন কাল্পনিক মহাশক্তিশালী অসুর/রাক্ষসের উল্লেখ আছে যার নাম দিয়েছেন কৃষ্ণ!  তাই ভারতবর্ষে সব ধর্ম প্রচারের ক্ষেত্রেই বাধা ছিল শ্রীকৃষ্ণ তাই বিভিন্ন ভাবে শ্রীকৃষ্ণ চরিত্রকে ছোট করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য আর রাধা এই উদ্দেশ্যর ফল মাত্র! 

#শ্রীমদভগবদগীতায় ভগবান  শ্রীকৃষ্ণ নিজেই বলেছেন, আমার ভক্ত হও, আমার পূজা এবং আমাকে নমস্কার কর!

মন্মনা ভব মদ্ভক্তঃ মদযাজি মাম্‌ নমস্কুরু ।

 মাম এষ্যসি সত্যম্‌ তে প্রতিজানে প্রিয় অসি মে ।।৬৫

 অর্থ-তুমি আমাতে চিত্ত স্থির কর এবং আমার ভক্ত হও। আমার পুজা কর এবং আমাকে নমস্কার কর। তুমি আমার অত্যন্ত প্রিয়। এই জন্য আমি প্রতিজ্ঞা করছি যে এই ভাবে তুমি আমাকে প্রাপ্ত হবে।

 সর্বাধর্মান পরিত্যজ্য মাম একম্‌ শরনম্‌ ব্রজ ।

 অহম্‌ ত্বাম সর্বপাপেভ্যঃ মোক্ষয়িষ্যামি মা শুচঃ ।।৬৬

 অর্থ-সমস্ত ধর্ম পরিত্যাগ করে কেবল আমার শ্বরনাগত হও। আমি তোমাকে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করব। সে বিষয়ে তুমি কোন দুশ্চিন্তা করো না।

#copied
এগুলো কালেক্টেড পোস্ট। এগুলো পড়লে আর কয়েকটা উপরোক্ত বইগুলো পড়লে নিজেই ধারণা পাবেন