শনিবার, ১৩ মার্চ, ২০২১

আমাকে ধর্ষণ কর না

 আমরা এখন সমাজের  উচ্চ স্তরের  আধুনিক যুগে বসবাস করি।আমাদের হাতে আধুনিকতার সবগুলো সুযোগে আছে কিন্তু  শুধুমাত্র একটা জায়গায় আমারা আধুনিক হতে পারেনি। একটা জায়গায় আমরা সেই সেখানে রেখে গেলাম। প্রাচীনকালে কোন সমাজ ব্যবস্থা ছিলনা কিন্তু মানুষ সংঘবদ্ধভাবে জীবন-যাপন করতে। কারণ  কখনো কোনো বহিঃশত্রু পশুপাখি আক্রমণ করে তাহলে তারা  নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারে।

বর্তমানে আমরা যে সমাজে বসবাস করি সেটা হচ্ছে একটা পশুর সমাজ। এখানে পশুরা ঠিক যেরকম ব্যবহার করে আমরা এরকম ব্যবহার করেছি। অথচ আমাদেরকে বলা হয় সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষের আচরণগুলো দিনদিন পশুর থেকে খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আমাদের আচরণ এখন এমন হয়েছে, যে আমাদের দেখে পশুরাও লজ্জা পায় ।

বর্তমানে পশুরাও আমাদের থেকে ভালো আচরণ করে, কারণ  তারা নিজের জাত টাকে চিনে। হ্যাঁ আপনারা ঠিকই ধরেছেন আমি  কথা বলতে চাই নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে সেই মহিলা সম্পর্কে।রাতে ধর্ষণ করার পরে তার ছবিগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়েছে ।  সে এমন কথা বলেছে তাদেরকে আমার বাচ্চা আছে আমাকে ধর্ষণ কর না। তাদের কাছে অনেক কাকুতি-মিনতি করে শেষ রক্ষা করেনি তার প্রতি দয়া হয়নি।

সিলেটের একটা ঘটনা স্বামী স্ত্রী ভার্সিটিতে বেড়াতে গেছে। ছাত্রলীগের কিছু কাডার তাদেরকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় এবং স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করল। ধর্ষণের সময় আমাদের সমাজের মোল্লারা এবং মহাজনরা এবং ইসলামী চিন্তাবিদ  বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কথা বলে থাকে।  নারীর পোশাক এ সমস্যা। 

এখন আমার প্রশ্ন হল যে মহিলা গুলো বাইরে বেরোয় তাদের পোশাকে সমস্যা এটা মেনে নিলাম। কিন্তু যে মহিলাদের বাড়ি থেকে জোর করে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে তাদের কি সমস্যা ছিল। এক্ষেত্রে মোল্লার হয়তোবা চুপ থাকবেন বা নতুন কোনো কথা বলবেন। সব মোল্লারে এবং সব ইসলামী চিন্তাবিদদের একটু কমান একটা জায়গায় এসে বলে, মহিলাদের পর্দাশীল হতে হবে এবং তাদের বোরকা পরতে হবে। এখানে উল্লেখ করা ভালো যে আমাদের গণ্যমান্য একজন হুজুর শফি হুজুর তিনি বলেছিলেন মহিলারা তেঁতুলের মতো যাদের দেখতে নাকি মুখ দিয়ে লালা ঝরে। যেখানে হেফাজতের সর্বোচ্চ পর্যায়ের একজন নেতা মহিলাদের তেতুলের সাথে তুলনা করতে পারে সেখান থেকে আমরা কি আশা করতে পারি।

সবথেকে বড় সমস্যা হচ্ছে তাদের চিন্তাভাবনা প্রবলেম আছে। আপনি যদি আপনার চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করেন আপনার সমাজের পরিবর্তন হয়ে যাবে।  যতদিন পর্যন্ত আমরা নিজেকে পরিবর্তন না করতে পারব ততদিন সমাজ পরিবর্তন হবে না। নিজের পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তন হবে। এখন একটা ঘটনা ঘটলে রাস্তা ব্লক করে গোল হয়ে দাঁড়ায় প্রতিবাদ জানায় কোনো লাভ হচ্ছে না। আমাদের অন্য কিছু চিন্তা করতে। অন্যায় প্রতিবাদ অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য নতুন করে প্রতিবাদের ভাষা তৈরি করতে হবে। অন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে।

আচ্ছা যে ধর্ষণ করে তার বাবা মা নাই, তার ফ্যামিলি নাই। তার তো সবাই আছে আত্মীয়-স্বজন বাবা-মা পাড়া-প্রতিবেশী সবাই। তাহলে তার বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন  তাকে সবথেকে ভালোভাবে শাস্তি দিতে পারে। একজন ধর্ষককের পরিবার এবং আত্মীয়-স্বজন সামাজিকভাবে বহিস্কৃত করা যেতে পারে। যে ব্যক্তি ধর্ষণ করেছে যদি সে বিবাহিত হয় তাহলে তার সন্তানের সামনে এসে দাঁড়াতে পারবেনা। পৃথিবীতে কোন সন্তানের চায় না যে তার 

একজন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী তার ধর্ষণ নিয়ে একটা  এক্সপেরিমেন্ট করেছেন। এক্সপেরিমেন্টের উৎপাদনশীলতা একটা কুকুর। তিনি চারটে কুকুরকে আলাদা করে রাখলেন এবং প্রতিদিন তাদের নির্দিষ্ট টাইমে খাবার দিতেন। এর পরে তিনি দেখলেন যে কুকুরগুলো খাবার খাওয়ার সময় এক ধরেন মালা বের করে। এভাবে চলতে লাগল বেশ কিছুদিন তারপর তিনি খেয়াল করলেন যে তার পায়ের শব্দ শুনেই কুকুরের মুখ দিয়ে এক ধরনের মালা বের হয়। এরপর তিনি আর একটা নতুন নিক চিন্তা করলেন যে তিনি আসার আগে একটা বেল বাজাবেন। এরপরে খাবার না নিয়ে এলো বেল বাজালো কুকুরে মুখ দিয়ে ঠিক আছে আমি একটা লালা বের হতো।

এখানে বোঝা যায় যে আসলে মানুষের মস্তিষ্কে সবকিছু উৎপন্ন হয়। আপনি যদি মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। তাহলে আপনি সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন ।আপনি যদি মস্তিষ্কে নিয়ন্ত্রণ না করতে পারেন আপনি কোন কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না ‌।

আমাদের সমাজটা এমনভাবে তৈরি করা যায় না, যেখানে একজন ধর্ষক কে বিশেষভাবে প্রচার করা হবে।যিনি একজন ধর্ষক সে একটা জঘন্যতম কাজ করেছে। তাকে সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। তার বাবা মা তাকে বয়কট করবে তার আত্মীয়স্বজন বয়কট করবে আস্তে আস্তে দেখা যাবে সে সমাজে কোন স্থানই পাবেন। যখন একজন ব্যক্তির সাথে এই ধরনের কাজ করবেন।  তখন সে আপনি আপনি তার এই ধরনের খারাপ চিন্তা মাথা থেকে চলে যাবে।

সর্বোপরি আমাদের আইনের শাসন ভালোবেসে কঠোর হতে হবে। ‌ আইনটা সৌদির আরবের মত করতে হবে। ধর্ষণ এখন একটা সামাজিক ব্যাধিতে রূপান্তরিত হয়েছে। এটাকে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। সমাজ যদি একতাবদ্ধ হয় তাহলে এটা প্রতিরোধ করা সম্ভব।

আমাদের সামাজিকতা এর বড় হাতিয়ার সামাজিকভাবে তাদেরকে বয়কট করতে হবে। আর কেউ যেন কখনও ধর্ষন না হয়। আমাদের মানবিক মূল্যবোধ এটা সহ পরিবার থেকেই দিতে হবে। পরিবার যদি সুশিক্ষিত শিক্ষা দেয় তাহলে সন্তান ও সুশিক্ষিত হয়।এখন আমাদের পরিবারের বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। প্রতিটি পরিবারের প্রতিটি সন্তানকে যেন সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারে এবং এটা যে একটা জঘন্যতম অপরাধ। সেটা যেন তারা তাদের কে ভালোভাবে বুঝিয়ে দিতে পারি।






পূজার সময় শঙ্খ, ঘন্টা ও উলুধ্বনির মাহাত্ম্য কী

 পূজার সময় শঙ্খ, ঘন্টা ও উলুধ্বনির মাহাত্ম্য কী?


 অালোচনাঃ----

♦️ শঙ্খঃ---- যে স্থানে শঙ্খধ্বনি হয়, সেখানে লক্ষ্মী সুস্থিরভাবে অবস্থান করেন। শঙ্খে হরি নিয়তই অধিষ্ঠিত, তাই যে স্থানে শঙ্খ, সেস্থানে শ্রীহরি লক্ষ্মীসহ বিরাজ করেন। তাই শঙ্খধ্বনি অত্যন্ত মঙ্গলময় এবং তা অশুভ শক্তি দূরীভূত করে। ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে ( প্রকৃতখণ্ড ২০.২৭--৩১) তা উল্লেখ করা হয়েছে। শঙ্খধ্বনি শ্রোতার মনযোগ অাকর্ষণ করে হ্নদয়ে অাধ্যাত্মিক উদ্যম জাগরিত করে।


♦️ ঘন্টাঃ---- সাধারণত মন্দিরে প্রবেশের পূর্বে এবং অারতিকালে ঘন্টা বাজানো হয়। ঘন্টাধ্বনির মাধ্যমে ভগবানের মনযোগ ও দৃষ্টি অাকর্ষণ করা হয়। ঘন্টাধ্বনি অশুভ শক্তিকে দূরে রাখে। অামাদের মস্তিষ্ক থেকে বর্তমান নেতিবাচক চিন্তাগুলো মুছে যায় এবং ভগবৎ--অারাধনায় অামাদের মনোযোগী করে তোলে।


♦️উলুধ্বনিঃ---- স্ত্রীলোকদের দ্বারা কৃত উলুধ্বনি অশুভশক্তি বিনাশকারী ও মঙ্গলময় এবং হরিধ্বনি সহযোগে উলুধ্বনি অাধ্যাত্মিক চেতনাকে উজ্জীবিত করে ও উদ্যম বৃদ্ধি করে। কিন্তু পুরুষদের তা কখনো করা উচিত নয়, কারণ তা তাদের মুখ থেকে ধ্বনিত হলে সেই ধ্বনি অমঙ্গলজনক বলে মনে করা হয়।

সর্বোপরি, শঙ্খধ্বনি, ঘন্টাধ্বনি ও উলুধ্বনি ভগবানের অত্যন্ত প্রিয় এবং মঙ্গলময় ; তাই অনাদি কাল ধরেই সনাতন ধর্মীয় সংস্কৃতিতে এগুলোর ব্যবহার বিশেষভাবে লক্ষণীয়।


🙏🌿🙏🙏জয় শ্রী কৃষ্ণ 🙏🙏🌿🙏


রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী কেন সিঁদুর পরা উচিত মহিলাদের?

 হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী কেন সিঁদুর পরা উচিত মহিলাদের?


সিঁদুর বিবাহিত মহিলার প্রতীক। যা তারা স্বামীর মঙ্গলকামনা করে পরে থাকে। হিন্দু ধর্মে মনে করা হয়, স্ত্রী তার সিঁদুরের শক্তিতে স্বামীকে যেকোনো বিপদের থেকে বাঁচাতে পারে। তাই ধর্মে বিবাহিত মহিলাদের বিয়ের পর সিঁদুর পরা রীতি।


বিবাহিত হিন্দু নারীদের সিঁথিতে সিঁদুর পরা আনুমানিক 5000 বছর প্রাচীন হিন্দু ঐতিহ্যময় সংস্কৃতি। প্রাচীন রামায়ণে মাতা সীতা এবং মহাভারতে দ্রৌপদী সিঁথিতে সিঁদুর ব্যাবহারের স্পস্ট প্রমাণ আছে। রামায়ণে শ্রীরাম যখন মাতা সীতাকে বিবাহ করেন তখন তিনি মাতা সীতার সিঁথিতে সিঁদুর দান করেছিলেন। একই প্রমাণ আছে হরিবংশ পুরাণে যখন শ্রীকৃষ্ণ রুক্মিনীদেবীকে বিবাহ করেন, তখন তিনিও রুক্কিনীদেবী সিঁথিতে সিঁদুর দান করেছিলেন। এই পরম্পরাই এখনও অবধি হিন্দু বিবাহতে চলে আসছে। যেখানে স্বামী তার স্ত্রীকে সিঁথিতে সিঁদুর দান করে, স্ত্রী হিসাবে তাকে গ্রহণ করে। এছাড়া বেশকিছু ঐতিহাসিক এটা স্বীকার করে থাকেন।প্রাচীন হরপ্পা সভ্যতাতেও নারীরা সিঁদুর ব্যবহার করতো।


সিঁদুরকে মেয়েদের ১৬ সিঙ্গারের মধ্যে একটা মানা হয়। বিবাহিত মহিলাদের এক প্রকার প্রতীক হিসেবে দেখা হয় সিঁদুরকে। হিন্দু ধর্মে বলা হয় সিঁদুরের লাল রঙ স্বামীর দীর্ঘ জীবনের কামনা করে মহিলারা পরেন। লাল রঙ শক্তি ও ভালোবাসাকে বহন করে বলে মনে করা হয়। কিন্তু ধর্ম নয় বৈজ্ঞানিকরাও সিঁদুর পরার কিছু বৈজ্ঞানিক ব্যাখা দিয়েছেন। চলুন দেখে নেওয়া যাক হিন্দু ধর্ম মতে ও বৈজ্ঞানিক মতে সিঁদুর পরার ব্যাখা।


বৈজ্ঞানিক মতে কেন সিঁদুর পরা উচিত মহিলাদের?


সিঁদুর পরার কিছু বৈজ্ঞানিক দিকও রয়েছে। বৈজ্ঞানিক মতে, সিঁদুর মাথার নার্ভের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। মহিলারা যেখানে সিঁদুর পরেন, মাথার সেই জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ নার্ভ থাকে। মেডিটেশনেও সাহায্য করে সিঁদুর। কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন , কপালে সিঁদুর পড়লে এটি ঐ জায়গায় থাকা নার্ভ শান্ত রাখে এবং পিটুইটারি গ্রন্থির কার্যক্রমে পরোক্ষ সাহায্য করে।


সিঁদুরের রাসায়নিক সংকেত,


সিঁদুর একটি অম্লীয় বা এসিড জাতীয় পদার্থ। রক্তলাল রঙের এই পদার্থের রাসায়নিক সংকেত-  Pb3O4 । এর বহুল প্রচলিত রাসায়নিক নাম হলো প্লাম্বাসো প্লাম্বিক এসিড। এছাড়া একে লেড (II, IV) অক্সাইড এবং ট্রাইলেড টেট্রাঅক্সাইডও বলা হয়। লাল রঙের হওয়ায় একে ইংরেজিতে Red Lead ও বলা হয়ে থাকে। এগুলো ছাড়াও এর আরো প্রায় ১০ টি Chemical Synonym রয়েছে। এটি মূলত সীসার একটি অক্সাইড যৌগ। এর আণবিক গঠন জটিল ধরণের। এর গলনাংক ৫৫০°C তাপমাত্রার অধিক। এটি পানিতে অদ্রবণীয় কিন্ত এসিডে আংশিক দ্রবণীয়। 


সনাতনী নারীদের সিঁথিতে সিঁদুর পরার মধ্যে বেশ কয়েকটি কারণ নিহিত রয়েছে,


১. সিঁদুর পরলে প্রথম দৃষ্টিতেই বলে দেওয়া যায় ঐ নারী বিবাহিত। তার স্বামী রয়েছে। সে কারণে অন্য পুরুষের লোভাতুর, লোলুপ দৃষ্টি প্রতিহত হয়। হিন্দু নারীরা বিশ্বাস করেন সিঁদুরে স্বামীর মঙ্গল চিহ্ন রয়েছে।


২. সিঁদুর দেওয়ার সময় নারীরা নিচের দিকে নয়, ঊর্ধ্বায়ণ করে দেন। কেন? সিঁদুর ঊর্ধ্বায়ণের মাধ্যমে নারীরা স্বামীর আয়ু বৃদ্ধির প্রার্থনা করেন।


৩. সৌন্দর্যগত কারণেও সিঁদুর ব্যবহার করেন হিন্দু নারীরা। সিঁদুর পরলে নিশ্চিতভাবেই নারীদের দেখতে আরও সুন্দর লাগে। এ কারণে বর্তমানে অনেক অহিন্দু নারীও সিঁদুর পরেন।


৪. হিন্দু নারীর সিঁদুর পরা নিয়ে সাংস্কৃতিক নৃতত্ত্ব ভিন্ন কথা বলে। সেই বিদ্যার বিশেষজ্ঞদের মতে, লাল বর্ণের সিঁদুর কপালে ধারণ করার অর্থ জড়িয়ে রয়েছে আদিম উর্বরাশক্তির উপাসনার মধ্যে। হিন্দু ধর্ম বলে আজ যা পরিচিত, তার উৎস এক কৌম সমাজে। সেখানে গাছ, পাথর, মাটি ইত্যাদিকে প্রাকৃতিক শক্তির প্রতীক বলে মনে করা হত। আর তাদের কাছে লাল রংটি ছিল সৃষ্টির প্রতীক। 


সেই আদিম কাল থেকেই লাল সিঁদুরকে ভারতীয়রা বেছে নেন তাঁদের একান্ত প্রসাধন হিসেবে। বিবাহিতা মহিলাদের ললাটে কুঙ্কুম তাঁদের সন্তানধারণক্ষমতা হিসেবেই বর্ণনা করে।


৫. শাস্ত্র অনুযায়ী, লাল কুঙ্কুম শক্তির প্রতীক। মানব শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন দেবতা অবস্থান করেন। ললাটে অধিষ্ঠান করেন ব্রহ্মা। লাল কুঙ্কুম ব্রহ্মাকে তুষ্ট করার জন্য ব্যবহৃত হয়।


বন্ধুত্ব হোক কৃষ্ণ ও সুদামার মতো

আজ ফ্রেন্ডশিপ ডে,
বন্ধুত্ব দিবস !
৩০শে জুলাই যারা ফ্রেন্ডশীপ ডে পালন করেছে,ইয়া্ লম্বা লম্বা পোস্ট করেছে, স্ট্যাটাস দিয়েছে, তারা আমেরিকার ফ্রেন্ডসিপ ডে কে নিজেদের ভেবে ভুল করেছে ।।
ফ্রেন্ডশিপ ডে মানে এই নয়, যে নির্দিষ্ট দিনের জন্য সমস্ত বন্ধুত্ব সঞ্চিত থাকবে, বাকি দিন গুলো নিজের নিজের জায়গায় নিজ নিজ স্বার্থে পর্যবসিত থাকবো, এক্কেবারে আইসোলেটেড !
কোনো যোগাযোগ না
কোনো ভাব বিনিময় না,
এটা ফ্রেন্ডসিপ হতে পারে না ।
বন্ধুত্ব হোক কৃষ্ণ ও সুদামার মতো।
পরিস্থিতি,সুযোগ,কাল এর চক্রে আমরা পরস্পর যত দূরেই থাকি না কেন, সাক্ষাৎ হলে যেন পুনরায় একাত্মা, একপ্রান হয়ে যাই ।
এটাই থাকুক বন্ধুত্বের মূলমন্ত্র !
কৃষ্ণ ও সুদামার বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের একটি ছোট্ট গল্প বলি--
সুদামার শৈশবে একসাথে পড়াশুনা, খেলাধূলা করা অভিন্ন হৃদয়ের বন্ধু কৃষ্ণ সময়চক্রে একজন রাজা হয়েছিলেন। অন্যদিকে সেই সময় সুদামা আর্থিক দিক থেকে দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন । তাঁর ভূসম্পত্তি, ঘর বাড়ি কিছুই ছিল না।
একদিন সুদামার স্ত্রী তাকে বললেন "দেখুন কৃষ্ণ আপনার খুব প্রিয় বন্ধু। আপনি কি তার কাছে কিছু সাহায্য চাইতে পারেন না?"
একথায় সুদামা অল্প লজ্জিত হয়ে বলেন "আমি আমার বন্ধুর কাছে কি করে সাহায্য চাইতে পারি ?
এটা‌ কি‌ আমার উচিত হবে ? "
সেই সময় সুদামা মানা করলেও,
যখন তার কাছে আর কোনও উপায় রইল না,
তখন তিনি কৃষ্ণের সাথে দেখা করতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন।
আমাদের সমাজের একটি প্রথা আছে যে আপনি যখন কারও সাথে দেখা করতে যাবেন, তখন আপনি খালি হাতে যাবেন না।
সুদামা মহা আপদে পড়লেন, তার তো কিছুই নেই। তার পোশাক ও ছিঁড়ে গেছে। তিনি এতটাই গরীব !
শেষমেষ কিছু না পেয়ে বাড়িতে থাকা চালভাজা নিয়েই চললেন কৃষ্ণের উদ্দেশ্যে, তিনি সেগুলিকে একটি কাপড়ের পুঁটলি তে নিয়েছিলেন।
দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে তিনি কৃষ্ণের প্রাসাদে প্রবেশ করলেন,
প্রাসাদ খানা সুন্দরভাবে সজ্জিত,স্বর্ণালঙ্কার দিয়ে খচিত, মনিমুক্তার সমাহারে চারদিক ঢাকা ।
সুদামা যখন প্রাসাদে প্রবেশ করলেন তখন ভিতরে রাজসভা চলছে
কৃষ্ণ তাঁর সিংহাসনে বসে ছিলেন এবং আশেপাশে মন্ত্রী ও পারিষদ রা ।
সুদামার দেখা পাওয়া মাত্র, কৃষ্ণ ছুটে গেলেন তার কাছে , বন্ধুকে জড়িয়ে ধরলেন ।
দুধ দিয়ে প্রিয় বন্ধুর পা ধুইয়ে দিলেন । তাঁর নিজের সিংহাসনে বসালেন সুদামা কে, কৃষ্ণ যেহেতু, সব সময়ই রসিকতা করতে ভালোবাসেন, সুদামা ভরাসভায় লজ্জিত অনুভব করছেন, এটা দেখা সত্ত্বেও তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি আমার জন্য কী এনেছ? দেখাও "
সুদামা আরো লজ্জা পেলেন, রাজসভার চারদিক দেখে তিনি তার ছেঁড়া কাপড় দিয়ে তালি মারা পুঁটলি টিকে, তার উত্তরীয়ের আড়ালে লুকানোর চেষ্টা করলেন,
মনে মনে সুদামা বিড় বিড় করে যাচ্ছিলেন " এই ভরা সভাতে ঐ চালভাজা দেওয়া কি‌‌ ঠিক হবে ?"
কিন্তু তারা যে অভিন্ন হৃদয়ের বন্ধু, সুদামা র মনের কথা বোঝা মাত্র, কৃষ্ণ জোরপূর্বক পুঁটলি টিকে ছাড়িয়ে নিলেন, তার কাছ থেকে ।।
এক মুঠো চাল ভাজা মুখে পুরলেন কৃষ্ণ।
তা দেখে সুদামার চোখ ছলছল করে উঠলো , ভরা রাজসভা তে তারা যেন এক অন্য জগতে হারিয়ে গেলেন ।
সুদামা ভুলে ই গেলেন, কি‌ জন্য এসেছেন কৃষ্ণের দরবারে । কৃষ্ণ ও জিজ্ঞেস করলেন না, কেন‌ সুদামা এসেছেন তার কাছে ।
বন্ধুত্বে মহিমান্বিত হয়ে তারা ফিরে গেলেন যমুনার পাড়ে !
তার কিছু ক্ষণ পর সুদামা , কৃষ্ণের প্রাসাদ থেকে বিদায় নিয়ে রওনা দিলেন তার বাড়ির উদ্দেশ্যে ।
বন্ধুত্ব এরকমই থাকুক!
সবার সাথে‌ সবার ।।।

শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

একটা ছোট্ট কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হয়তো অনেকেরই নজর এড়িয়ে গেছে

 একটা ছোট্ট কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হয়তো অনেকেরই নজর এড়িয়ে গেছে। 


ইতিহাসে চৌরিচৌরার ঘটনা সবাই নিশ্চয়ই জানেন? যেদিন অসহযোগ আন্দোলনে পুলিশ গুলি চালালে  বিক্ষুব্ধ জনতা চৌরিচৌরা থানায় আগুন ধরিয়ে দেয়। তাতে ২৩ জন পুলিসকর্মী ও অফিসার মারা যান। 


এই ঘটনার ফলেই গান্ধী তাঁর আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয়। যার প্রেক্ষিতে নেতাজী ক্ষুব্ধ হয়ে বলেছিলেন স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে এসেও আমরা থেমে গিয়েছিলাম।


যাইহোক‚ পরবর্তী থানায় আক্রমণের ঘটনায় কয়েকশো বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২২৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। বিচার চলাকালীন ছ’জনের মৃত্যু হয়। আট মাস দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ১৭২ জনের ফাঁসির সাজা হয়, আর বাকিদের দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। 


এতদিন ভারতের ইতিহাসে এই ঘটনাকে নেগেটিভ দৃষ্টিতেই দেখা হতো। সরকারি পাঠ্যবইতেও তেমন গুরুত্ব পেত না এই ঘটনা! চৌরিচৌরার গুরুত্ব নিয়ে বলা হতো এই ঘটনার ফলে জাতীয় আন্দোলন হিংসাত্মক রূপ নিচ্ছিলো‚ ফলে ব্রিটিশরা আরো অত্যাচার শুরু করতো‚ দেশবাসীকে বাঁচানোর জন্যে গান্ধী এই পদক্ষেপ নেন‚ ব্লা ব্লা ব্লা………


অথচ যেটা সুকৌশলে এড়িয়ে যাওয়া হতো যে পুলিশের গুলিতে অহিংস আন্দোলনকারীরা মারা যাওয়াতেই পাব্লিক অমন হিংস্র হয়ে উঠেছিলো ( মারা যাওয়ার ঘটনা কোনো পাঠ্যবইতে পাবেন না।) 


নেহেরুভিয়ান ন্যারেটিভে খুব মোটাদাগে চেপে যাওয়া হয় ব্রিটিশ পুলিশের এই অত্যাচারকে‚  শুধুমাত্র গান্ধীর আবেগকে জাস্টিফাই করার জন্যে। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লাখো মানুষের আত্মত্যাগ সেদিন মূহুর্তের মধ্যে ব্যর্থ হয়ে গিয়েছিল গান্ধীজির সাময়িক আবেগের জন্যে। 


যাইহোক‚ সেই ঘটনার ১০০ বছর পর অবশেষে ভারত সরকারের কাছে সদর্থক দৃষ্টিভঙ্গি পেলো চৌরিচৌরা।  নরেন্দ্র মোদি কোট আনকোট জানিয়ে দিলেন এই ঘটনা ছিলো জনতার স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন!  (link ফার্স্ট কমেন্টে) 


অর্থাৎ সোজা ভাষায় এত বছর পরে চৌরিচৌরার আন্দোলনকারীরা তাদের যোগ্য সম্মান পেলো ভারর সরকারের থেকে।


পুনঃ চৌরিচৌরার ঘটনা ছিলো গান্ধীবাদী ভাবধারার সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক! কমিউনিজম আর গনতন্ত্র যেমন পাশাপাশি থাকতে পারে না‚ ইসলাম আর বহুত্ববাদ যেমন পাশাপাশি হাঁটতে পারে না‚ জল আর আগুন যেমন একসাথে থাকতে পারে না‚ গান্ধীবাদ আর চৌরিচৌরাও ঠিক তাই। একজনকে ধরতে গেলে অন্যজনকে ছাড়তেই হবে।


এই চৌরিচৌরার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের যোগ্য সম্মান প্রদানের দ্বারা ভারত সরকার কি তাহলে গান্ধীবাদকেই অফিসিয়ালি ঝেড়ে ফেলার ইঙ্গিত দিলো?  কে বলতে পারে?

https://www.facebook.com/groups/1641414199506584/permalink/2795186334129359/

Credits Souvik Dutta


হিন্দুধর্মে_ঘট_ব্যবহার_করা_হয় _কেন?

 ছোটবেলা থেকে অনেকের মনে প্রশ্ন হতে পারে,যেকোনো পুজোয় ঘট কেন ব্যবহার করা হয়? দুর্গা পুজা, লক্ষ্মী পুজা, সরস্বতী পুজা , মনসা পুজা প্রায় সব পুজায় দেখা যায় যে প্রতিমা থাকুক আর না থাকুক ঘট থাকবেই।


যে কোন পুজোর সময় ঘট স্থাপন করতে হয়। ঘট কোন দেবী বা দেবতার প্রতিমা নয়। ঘট ভগবানের নিরাকার অবস্থার প্রতীক। হিন্দুরা পুজোর সময় যেমন ভগবানের সাকার স্বরূপ কে পুজো করে তেমনি নিরাকার স্বরূপকেও পুজো করেন। তাই ঘট স্থাপন প্রতি পুজোতে একান্ত আবশ্যক। ঘট স্থাপন ছাড়া পুজো অসম্পূর্ণ বলে মনে করা হয়। প্রায় সব পুজোয় ঘট লাগে।


যারা পুজোর কাজের সাথে জড়িত আমরা জানি ঘটের মধ্যে অনেক উপাদান ব্যবহার হয়। যেমন- পঞ্চশস্য, পঞ্ছগুড়ি,পঞ্চপল্লব,পঞ্চরত্ন, জল,মাটি,নারিকেল,গামছা,কান্ডকাঠি ইত্যাদি।


আজকে আমরা এসব উপাদানগুলোর তাৎপর্য সম্পর্কে জানব।


ঘট আমাদের দেহের প্রতিরুপ………


*****পুজোর সময় পঞ্চগুড়ি দিয়ে পিঠ তৈরি করা হয় ।

____এই পঞ্ছগুড়ি_পঞ্চমহাভুত (অর্থাৎ ক্ষিতি , অপ , তেজ , মরুৎ , ব্যোম ) এর প্রতিক।


এই পঞ্চমহাভুত এর উপর মৃত্তিকা দিয়ে পিঠ তৈরি করা হয়।

*****মৃত্তিকা বেদীর উপর পঞ্চশস্য দেওয়া হয়।

____এই পঞ্চশস্য আমাদের পঞ্চবৃত্তি (কাম,ক্রোধ , লোভ, মোহ ও মাৎসর্য) এর প্রতীক ।

এর ওপর ঘট উপস্থাপন করা হয় ।

ঘট আমাদের দেহের প্রতিক। আধ্যাত্মিক ভাষায় দেহকে দেহঘটও বলা হয়।


*******ঘটের ভেতর পঞ্চরত্ন দেওয়া হয়।

____পঞ্চরত্ন হল এই পঞ্চইন্দ্রিয়ের (চক্ষু, কর্ন, নাসিকা, ত্বক ও জিহ্বা) প্রতিক।


********এর পর ঘটে জল ঢেলে পূর্ণ করা হয়।

____ জল হল দেহরস বা রক্ত।


*******ঘটে এবার পঞ্চপল্লব দেওয়া হয়।

____এই পঞ্চপল্লব এই পঞ্চবায়ু (পান, অপান, উদ্যান, সমান , ব্যান)এর প্রতিক ।


******এর উপর ডাব বা নারিকেল দেয়া হয়। আমরা জানি নারিকেল এ আমাদের মুখের মত চোখ, মুখ ,নাক দেখা যায়।


____সেই কারনে নারিকেল আমদের মুখমন্ডলের প্রতিরুপ।


মস্তক থাকলে তাতে আচ্ছাদন দিতে হয়। তাই নারিকেল এর উপর গামছা বা বস্ত্র দেওয়া হয়।


এই হল আমাদের দেহের প্রতিরুপ।


—আর কান্ডকাঠি হল চারবেদের প্রতীক।

------------------------------------------------------------------------------

সদা সর্বদা শ্রী শ্রী রাধা ও কৃষ্ণের পাদপদ্মের কথা স্মরণ করুন, তাহলে শ্রীকৃষ্ণের দ্বারা আপনার জন্য বরাদ্দকৃত কার্য সম্পাদন করতে কোনও অসুবিধা অনুভব করতে হবে না।


জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণের কৃপার প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও ভরসা রাখতে হবে।


শ্রীকৃষ্ণের পবিত্র নামটিতে অসাধারণ আধ্যাত্মিক শক্তি রয়েছে কারণ শ্রীকৃষ্ণের নাম স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণের থেকে আলাদা নয় ....


ঐকান্তিক ভালবাসা এবং নিষ্ঠার সাথে এই নামগুলি জপ করুন তবেই আপনি চিণ্ময় আনন্দ অনুভব করবেন:


হরে কৃষ্ণ  হরে কৃষ্ণ  কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে

হরে রাম  হরে রাম  রাম রাম  হরে হরে ...


সনাতনী শাস্ত্রে পাঁঠা বলির কোনো উল্লেখ নেই

 সনাতনী শাস্ত্রে পাঁঠা বলির কোনো উল্লেখ নেই। উল্লেখ রয়েছে ছাগ বলির কথা। "ছাগ" মানে ছাগল বা পাঁঠা নয়। "ছাগ" শব্দের অর্থ ষড়রিপু। কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ, মাৎসর্য – এই ষড়রিপুকে এক কথায় ছাগ বলে। প্রকৃত অর্থে এই ষড়রিপুকেই বলি দিতে হয়। মায়ের কাছে নিরীহ প্রাণী বলি দিয়ে আমরা নিজেরাই পাপের ভাগিদার হচ্ছি।


সংস্কৃততে একটি শব্দেরই অনেক অর্থ থাকতে পারে। যেমন "জীঘ্রং" শব্দের একটি অর্থ হত্যা করা এবং আরেকটি অর্থ দান করা। তদ্রুপ "ছাগ" শব্দের একটি অর্থ ছাগল, আরেকটি অর্থ ষড়রিপু।


একটি শ্লোকের প্রসঙ্গ তুলে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছি।

"যুধিষ্ঠিরস্য য়া কন্যা নকুলেন বিবাহিতা..."


এই শ্লোকটি যদি কোনো সাধারণ মানুষকে শোনানো হয়, তাহলে তিনি এর অর্থ করবেন, যুধিষ্ঠিরের মেয়েকে চতুর্থ পান্ডব নকুল বিয়ে করেছে।


কিন্তু না, তা একদমই নয়। আমাদের ভারতীয় সনাতনী সংস্কৃতি এইরূপ নোংরা নয়। নিজের ভ্রাতুষ্পুত্রীর সাথে বিবাহ করা হলো শান্তিদূতদের সংস্কৃতি। 

তাহলে এই শ্লোকটির প্রকৃত অর্থ কী? চলুন, তা জানার চেষ্টা করি।


যিনি সর্বদাই স্থির, তিনিই যুধিষ্ঠির। এখানে "যুধিষ্ঠির" মানে হিমালয় পর্বতকে বোঝানো হয়েছে আর হিমালয়ের কন্যা হচ্ছেন পার্বতী। পার্বতীর সাথে নকুলের বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে।

ন কুল = অকুল; এখানে নঞ-তৎপুরুষ সমাস হচ্ছে। যাঁর কোনো কুল নেই, তিনিই হচ্ছেন নকুল অর্থাৎ মহাদেব শিব। তাহলে এখানে "নকুল" মানে চতুর্থ পান্ডব নয়।

অর্থাৎ শ্লোকটির যথাযোগ্য অর্থ হচ্ছে, হিমালয়ের কন্যা পার্বতীর সহিত মহাদেব শিবের বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। 


এইভাবেই তো সংস্কৃত শব্দের ভুল অর্থ সাজিয়ে, বেদের ভুল অনুবাদ করে বেদের মধ্যে "গোমাংস ভক্ষণ"-এর প্রসঙ্গ পর্যন্ত নিয়ে এনেছে বিধর্মীরা! এটি তো শুধুমাত্র একটি-দুটি উদাহরণ দিলাম। এরকম হাজারো উদাহরণ রয়েছে। সনাতনী সংস্কৃতিকে বিকৃত করার জন্য বিধর্মীরা সংস্কৃত শব্দের ভুল অর্থ বের করে এবং আমরা, সনাতনীরাও সংস্কৃত না জানার দরুন তাদের ফাঁদে পা ফেলি।


সংস্কৃত না বোঝার কারণে আমাদের সনাতনী সমাজে আরও অনেক কুসংস্কার তৈরি হয়েছে। যেমনঃ-

১. শিব লিঙ্গ-এর অর্থ শিবের প্রতীক, মহাদেব শিবের লিঙ্গ নয়।

২. তেত্রিশ কোটি দেবতা মানে তেত্রিশ প্রকার দেবতা, সংখ্যায় ৩৩ কোটি দেবতা নয়।


সকল সনাতনী বন্ধুর নিকটে আমার একটিই অনুরোধ। চলুন, আমরা আমাদের সামর্থ্য মতন সংস্কৃততে পঠনপাঠন শুরু করি। কিছু না জানার থেকে অল্প একটু সংস্কৃত জানাও অনেক ভালো।


আরেকটি অনুরোধ করি সকল সনাতনী বন্ধুকে।

দয়া করে কোনো উৎসবে পশুহত্যা করবেন না বা এই ঘৃণ্য কাজকে সমর্থন করবেন না। যদি কোথাও পশুহত্যা দেখতে পান, তাহলে অবশ্যই তার বিরোধ করুন।

মনে রাখবেন, প্রাণীহত্যা সনাতন ধর্মের বিরুদ্ধে। প্রাণীহত্যা আসলে আরবীয় ও বাম মার্গীয় সংস্কৃতি। 


সত্যের জয় হোক 🙏...।।

সনাতন ধর্মের জয় 🕉️...।।

জয় আর্যবর্ত 🚩...।।


https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1985957068213642&id=100003981050706


বৃহস্পতিবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

গীতার ১৮ টি নামের_মাহাত্ব্য

গীতার_১৮_টি_নামের_মাহাত্ব্য??

০১) গঙ্গা - এর অর্থ হল, গঙ্গায় ডুব দিলে কোন ব্যাক্তি তার সকল পাপ নাশ করতে পারে । তাই সবার প্রথমে গঙ্গার নাম নেয়া হয়।
০২) গীতা -যে ব্যাক্তি গীতাপাঠ করেন সেই মুহুর্তেই তার সকল পাপ নাশ হয় । তাই এখানে গীতার কথা বলা হয়েছে।
০৩) সাবিত্রী -তিনি এতটাই সতি ছিল যে, সে তার মৃত স্বামীর প্রান ফিরিয়ে এনেছিল। তাই এখানে সাবিত্রীর কথা বলা হয়েছে।
০৪) সীতা -ভগবান রামের স্ত্রী ,মাতা সীতা এতটাই পবিত্র ছিল যে, রাবণ শত চেষ্টার পরেও তা নষ্ট করতে পারেনি। তাই সীতা নাম মহাপবিত্র বলা হয় ।
০৫) সত্ব্যা -সত্ব্যা বলতে আমাদের আত্মার কথা বলা হয়েছে।আত্মা যেমন আমর গীতাও তেমনি অমর।
০৬) পতিব্রতা -পতিব্রতা বলতে ভগবানের প্রতি আনুগত্য থাকা।কারন একমাত্র ভগবান সকলের পতি আর আমরা সকলেই তার পত্নী।
০৭) ব্রহ্মাবলী -ব্রহ্মশক্তী থেকে নির্গত শক্তীকে বলাহয় ব্রহ্মাবলী। যে শক্তীর বিনাশ নেই।
০৮) ব্রহ্মবিদ্যা-ব্রহ্মবিদ্যাকে আমরা ব্রহ্মাবলীর অনুরুপ বলতে পারি।
০৯) ত্রিসন্ধ্যা - ত্রিসন্ধ্যা মানে হল তিন কালের সমষ্ঠী যথা-ইহকাল, বর্তমান কাল ও পরকাল।
১০) মুক্তিগ্রিহীনি-গীতাপাঠ করলেই মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাই এই নাম ব্যবহার করা হয়েছে।
১১) অর্ধমাত্রা -গীতায় ভগবান বলেছেন গীতা তাঁর অর্ধক তাই এই অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে।
১২) চিরানন্দা- চিৎ জগতের যে আনন্দ তাই চিরানন্দা।
১৩) ভবগ্নী-(ভব+অগ্নি) অগ্নি যেমন সোনা পুরে খাঁটি সোনায় পরিবর্তন করে। ঠিক তেমনি গীতাই পারে আমাদের ভবপুরছর সকল পাপ দুর করতে।
১৪) ভ্রান্তি নাশিনী- আমরা আমাদের চারপাশের জিনিস দেখে বিভ্রান্ত হই। আর একমাত্র গীতাই পারে আমাদের এই ভ্রান্তি নাশ করতে।
১৫) বেদত্রই- ত্রিবেদের সমান্যয়ে গঠীত শক্তিই হলো বেদত্রই।
১৬) পরানন্দা - অপরের দোষ না দেখে তার ভাল দিক দেখার মধ্যে যে আনন্দ। গীতায় তার কথাই বলা হয়েছে।
১৭-১৮) তথাস্তু জ্ঞানমঞ্জুরী - গীতা পৃথিবীর সকল জ্ঞান তথা বিজ্ঞানের আধার। তাই একে জ্ঞানমঞ্জুরী বলা হয়েছে।
জয় গীতা🙏🙏🙏
হরে কৃষ্ণ 🙏🙏🙏
May be an image of 7 people

বর্ণ প্রথা সম্পর্কে

 বর্ণ প্রথা সম্পর্কে পোস্ট।

ব্রাহ্মণ কে?
👉 যে ঈশ্বরের প্রতি গভীরভাবে অনুরক্ত,অহিংস,সৎ,নিষ্ঠাবান,সুশৃঙ্খল,বেদপ্রচারী,বেদজ্ঞানী সেই ব্রাহ্মণ।
--------------------------------(ঋগবেদ-৭.১০৩.৮)
ক্ষত্রিয় কে?
👉 দৃঢ়ভাবে আচার পালনকারী,সৎকর্মের দ্বারা শুদ্ধ,রাজনৈতিক জ্ঞান সম্পন্ন,অহিংস,ঈশ্বর সাধক,সত্যের ধারক,ন্যায় পরায়ণ,বিদ্বেষমুক্ত,ধর্মযোদ্ধা, অসৎ এর বিনাশকারী সে ক্ষত্রিয়।
-------------------------------(ঋগবেদ-১.৬৬.৮)
বৈশ্য কে?
👉 দক্ষ ব্যবসায়ী, দানশীল,চাকুরীরত এবং চাকুরী প্রদানকারী।
------------------------------(অর্থববেদ-৩.১৫.১)
শূদ্র কে?
👉 যে অদম্য পরিশ্রমী, অক্লান্ত জরা যাকে সহজে গ্রাস করতে পারে না,লোভমুক্ত কষ্টসহিষ্ণু সেই শূদ্র।
----------------------------(ঋগবেদ-১০.৯৪.১১)
জন্ম যেখানেই হোক কর্মছাড়া বা যোগ্যতা ছাড়া কেউ নিজের উচ্চ আসনের অধিকারী হতে পারে বা। যেমন ---
(ক)প্রীষধ ছিলেন রাজা দক্ষের পুত্র,যিনি পরে শূদ্র হয়েছেন।তিনি তপস্যা দ্বারা মোক্ষ লাভ করেন।(বিষ্ণু পুরাণ ৪.১.১৪)
(খ)নবগরাজা নেদিস্থের পুত্র পরিণত হন বৈশ্যে।তার অনেক পুত্র হয়ে যান ক্ষত্রিয়। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.১.১৩)
অজ্যেষ্ঠাসো অকনিষ্ঠাস এতে সং ভ্রাতারো তাবৃধুঃ সৌভগয় যুবা পিতা স্বপারুদ্র এযাং সুদুঘা পুশ্নিঃ সুদিনা মরুদ্ভ।। (ঋগবেদ-৫.৬০.৫)
অনুবাদ: কর্ম ও গুণভেদে কেউ ব্রাহ্মণ, কেউ ক্ষত্রিয়, কেউ বৈশ্য,কেউ শূদ্র।তাদের মধ্যে কেহ বড় নয়, কেহ ছোট নয়।ইহারা সকলে ভাই ভাই।সৌভাগ্য এবং জননীরুপ।পুরুষার্থী সন্তানই সৌভাগ্য প্রাপ্ত হন।সুতরাং জন্ম নয় বরং গুণ ও কর্ম অনুসারে বর্ণ নির্বাচন হয়।
No photo description available.

মালা জপ করার নিয়মাবলীঃ

 মালা জপ করার নিয়মাবলীঃ

#প্রশ্ন : হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র নামাপরাধ হীন
হয়ে কিভাবে জপ করবেন ?
#উওর :জপ মালায় ১০৮টি গুটি
থাকে,একদিকে বড়গুটি অন্য দিকে ছোটগুটি
থাকে। বড়গুটি এবং ছোটগুটির সংযোগ
স্থলে একটি ঘটের মতো গুটি থাকে যাকে
মেরুগুটি বলা হয়। হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ
শুরু করার পূর্বে ডানহাত দিয়ে মেরুগুটি ধরে
তিনবার পঞ্চতত্ত্ব মন্ত্র
(জয় শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ,
শ্রীঅদ্বৈত গদাধর শ্রীবাসাদি গৌর
ভক্তবৃন্দ) জপ করতে হয়। তারপর
তর্জনী অঙ্গুলী স্পর্শ না করে মধ্যমা ও
বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে বড় দিকের প্রথম গুটিটি
ধরে হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র
"হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে
হরে,হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে"
সুষ্পষ্ট ভাবে উচ্চারণ করে জপ করতে হয়,
যাতে নিজের কানে শোনা যায় । এরপর
দ্বিতীয় গুটিটা বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে ধরে জপ
করতে হবে। মনে রাখবেন একটি গুটিতে
যতক্ষণ পুরো হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ না
হচ্ছে ততক্ষণ দ্বিতীয় গুটিতে এগোবেন
না। এই ভাবে জপ করতে করতে আপনি
মেরুগুটির পাশ্বে ছোট গুটির কাছে
পৌঁছবেন।এখন আপনার এক মালা জপ হয়ে
গেল।মনে রাখবেন মেরুগুটি টপকে গেলে হবে
না । পুনরায় যখন জপ শুরু করবেন তখন
পঞ্চতত্ব মন্ত্র জপ করে মালাটা ঘুরিয়ে
নিয়ে ছোটগুটির
দিকটি সামনে আনতে হবে এবং ছোট দিকের
প্রথম গুটিটি ধরে পূর্বের মতো হরেকৃষ্ণ
মহামন্ত্র জপ করতে করতে ছোট থেকে
বড়গুটির দিকে এগোবেন ।এইভাবে আপনি
প্রতিদিন দুই, চার, আট দশ অথবা ষোল এই
রকম জোড় সংখ্যক মালা জপ করতে
পারেন কিন্তু এক তিন পাঁচ এই রকম
বিজোড় সংখ্যক মালা জপ করা যাবে না।
চার বার ষোল মালা জপ করলে এক লক্ষ
বার হরিনাম করা হয় ।
নিজে মালা জপ করুন
অন্যকে মালা জপ করতে অনুপ্রাণিত করুন।
May be an image of 1 person

শুভপরিণয়ের সময় বরবধূর মাথায় মুকুট বা টোপর কেন পরানো হয়??

🌺🍀শুভপরিণয়ের সময় বরবধূর মাথায় মুকুট বা টোপর কেন পরানো হয়??🌹🍀
🍁🍁 হিন্দু বাঙালি বিয়েতে নতুন বর বধূর সাজসজ্জার একটি অন্যতম উপকরণ হল মাথায় টোপর।
♦️♦️জানেন কি.... কেন বর কনের মাথায় এই টোপর পরানোর রীতি?
🌺কেন টোপর তৈরি করা হয় শোলা দিয়ে আর কেনই বা টোপরের রঙ সাদা হয়?
🌹 প্রাচীনকালে অভিষেকের সময় রাজাদের মাথায় রাজমুকুট পরিয়ে দেওয়া হত। কারণ এই মুকুট হল দায়িত্ব ও কর্তব্যের প্রতীক। তাই মুকুট পরিয়ে রাজার মাথায় রাজ্য ও প্রজাদের সমস্ত দায়িত্বের ভার তুলে দেওয়া হত।
🌹ঠিক তেমনি বরের #মাথায় মুকুট বা টোপর পরিয়ে তার মাথায় স্ত্রীর ভরণপোষণ ও সংসার প্রতিপালনের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়।
🌹একইভাবে কনের মাথায়ও টোপর পরানো হয়, যাতে সংসার সংগ্রামের সমস্ত ঝড়ঝাপটা দুজনে মিলেমিশে সামাল দেওয়ার দায়িত্ব নিজেদের মাথায় তুলে নিতে পারে।
🌹আর টোপরের রঙ #সাদা হয় এইকারণে.... যেহেতু সাদা রঙ সাহসের প্রতীক। সংসার জীবনের সফরে কোনও বাধা-বিপত্তি সমস্যায় ভীত না হয়ে নব দম্পতি যাতে সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যেতে পারে। তাছাড়া সাদা রঙ শুভ্রতা ও পবিত্রতার প্রতীক, নবদম্পতি যেন একটি সুন্দর স্বচ্ছ মধুময় পবিত্র সম্পর্কের বাঁধনে আবদ্ধ হয় তাই টোপরের রঙ হয় সাদা।
🌿🌹🌿এখন প্রশ্ন হল মুকুট বা টোপর কেন
শোলার তৈরি হয় এবং মালাকারেরাই এই মুকুট তৈরি করতে পারদর্শী হয়?
🌹কারণ পৌরাণিক গল্প অনুযায়ী মহাদেব নিজের বিবাহের সময় নিজের জন্য নরম কাঠ দিয়ে মাথার পাগড়ি তৈরি করার দায়িত্ব দেন বিশ্বকর্মাকে। কিন্তু দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা ধাতুর শিল্পে পারদর্শী ছিলেন, কাঠের নয়।
☘️☘️তখন মালাকার নামে এক যুবককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সে জলাভূমি থেকে শোলা সংগ্রহ করে মহাদেবের বিবাহের জন্য একটি নরম হালকা মুকুট তৈরি করে দেয়। সেই থেকেই বাঙালি বরদের মাথায় মালাকারদের তৈরি শোলার টোপর পরার প্রচলন হয়।
May be an image of jewelry